দেবিদ্বার প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার দেবীদ্বারে ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে কর্মিসভা করেছে ৬ নম্বর ফতেহাবাদ ইউনিয়ন ছাত্রলীগ। আজ শনিবার বিকেলে চান্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ কর্মিসভা হয়। এ সময় সভাস্থলে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল।
স্থানীয়রা জানায়, দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদের সহযোগী উপজেলা ছাত্রলীগ। তাঁদের নির্দেশে শনিবার বিকেলে চান্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক কর্মিসভা আহ্বান করে ফতেয়াবাদ ইউনিয়ন ছাত্রলীগ।
অপরদিকে একই স্থানে এই দিনে একই সময়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের সমর্থক উপজেলা যুবলীগের পক্ষ থেকে আরও একটি কর্মিসভা ডাকা হয়। এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই বিরোধপূর্ণ স্থানে ১৪৪ ধারা জারি করেন।
মো. আবুল কালাম আজাদ সমর্থিত ছাত্রলীগের আয়োজনে তৈরি মঞ্চ ও সভাস্থলের চেয়ার ভাঙচুর করে যুবলীগ কর্মীরা। ওই ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা, দেবীদ্বার সার্কেল এএসপি আমিরুল্লাহ ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সার্বিক) খাদেমুল বাহারের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
সংঘাত এড়াতে প্রশাসন সভাস্থলে ১৪৪ ধারা জারি করলেও দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদের সমর্থিত সহস্রাধিক ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে ওইস্থানে সভা পরিচালনা করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আসাদুর রহমান রনি বলেন, চার দিন আগে নির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা চান্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ছাত্রলীগের কর্মিসভা ডাকি। এমপি সমর্থিত যুবলীগও একই স্থানে আজকে একই সময়ে কর্মিসভা ডাকে। আমাদের কর্মী সভা শুরুর আগেই এমপির সমর্থক উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, খন্দকার ফখরুল ইসলাম, শাহরিয়ার, ফরহাদ হোসেন, নাজমুল হাসান, বিল্লাল মেম্বারের নেতৃত্বে আমাদের মঞ্চ, প্যান্ডেল ও চেয়ার ভাঙচুর করে পালিয়ে যায়। আমাদের ছাত্রলীগ কর্মীদের বাধভাঙা-স্রোতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেই কর্মিসভা চালাতে বাধ্য হই।’
এ ব্যাপারে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবুল কাসেম ওমানী বলেন, ‘আজ শনিবার বিকেল ৩টার দিকে চান্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক কর্মিসভা আহ্বান করেছিলাম। উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ সমর্থকেরা আমাদের কর্মীদের কর্মী সভাস্থলে জমায়েত হতে দেয়নি। তারা আমাদের লোকদের স্কুল মাঠ থেকে বের করে দেয়। প্রশাসন সভাস্থলে ১৪৪ ধারা জারি করায় আমরা কর্মসূচি বাতিল করি। ওরা নিজেরা নিজেদের মঞ্চ, প্যান্ডেল, চেয়ার ভাঙচুর করে আমাদের ওপর দোষ দেয়।’
এ ব্যাপারে দেবীদ্বার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খাদেমুল বাহার আবেদ জানান, ছাত্রলীগ এবং যুবলীগ একই স্থানে একই সময়ে কর্মিসভা ডেকেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে ঘটনাস্থল ১৪৪ ধারা জারি করি। ছাত্রলীগ বিশাল কর্মী বাহিনী নিয়ে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সভা করেছে।
মো. আরেফিন ফয়সাল তুহিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ। প্রধান বক্তা ছিলেন কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম রুবেল।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ৯ নম্বর গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক ছাত্রনেতা মো. মোকবল হোসেন মুকুল, দেবীদ্বার উপজেলা মৎস্যজীবী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া টিটু, ৬ নম্বর ফতেহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান মাসুদ, ৮ নম্বর জাফরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জাহিদুল আলম, সাবেক ছাত্রনেতা মো. হাবিবুর রহমান, হুসাইন আহমেদ, শয়ন দাস।
বিশেষ বক্তা ছিলেন দেবীদ্বার উপজেলা ছাত্রলীগ আহ্বায়ক মো. আসাদুর রহমান রনি, দেবীদ্বার উপজেলা ছাত্রলীগ যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সারোয়ার হোসেন রাকিব, মো. গোলাম মহিউদ্দিন সবুজ, মো. ইমরান হোসেন ইমু, মো. গাজী আসিফ বিন লতিফ, মো. দিদারুল আলম ফয়েজ প্রমুখ।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page